যখন হার্ডডিস্কের পরিবর্তে ফ্লপিডিস্ক কম্পিউটার স্টোরেজের প্রাথমিক উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হতো, তখন 'এ' ও 'বি' অক্ষরগুলো যথাক্রমে প্রথম ফ্লপিডিস্ক এবং দ্বিতীয় ফ্লপিডিস্কের জন্যে বরাদ্দ ছিল। 'এ' ড্রাইভ বা প্রথম ফ্লপির কাজ ছিল পিসি বুট করা বা অপারেটিং সিস্টেম চালু করা। 'বি' ড্রাইভ বা দ্বিতীয় ফ্লপির কাজ ছিল, ব্যবহারকারীর তথ্য সংরক্ষণ করা।
একইভাবে, এখনকার লোকাল ড্রাইভগুলোকেও সেভাবে লেবেল করা হয়। যেখানে, অপারেটিং সিস্টেম বা ওএস সম্বলিত ড্রাইভের জন্য 'সি' ব্যবহার করা হয় এবং ব্যবহারকারীর তথ্য বা ডেটা ধারণ করে এমন ড্রাইভগুলোর জন্য পরবর্তী অন্যান্য অক্ষরগুলো ব্যবহার করা হয়।
হার্ডডিস্কের আবির্ভাব বেশ পরের ঘটনা। কিন্তু হার্ডডিস্ক বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে ফ্লপিডিস্ক অপ্রচলিত হয়ে যায়নি। তখন কম্পিউটারে হার্ডডিস্ক দিয়ে ফ্লপিডিস্ককে প্রতিস্থাপন করার পরিবর্তে ব্যবহারকারীরা দুটিই একত্রে ব্যবহার করা শুরু করেন। ফলে, পরবর্তী ড্রাইভের জন্য বরাদ্দ 'সি' অক্ষরটি অতিরিক্ত স্টোরেজ ডিস্কের জন্য, অর্থাৎ এখানে হার্ডডিস্কের জন্য নির্ধারণ করা হয়।
বহু বছর পরে দেখা যায়, হার্ডডিস্কগুলো তাদের বহনযোগ্যতা, গতি ও স্টোরেজ ক্ষমতার কারণে ফ্লপিডিস্কগুলোকে সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপন করে ফেলে। তখন নির্মাতারা ধীরে ধীরে কম্পিউটারে ফ্লপিড্রাইভ রাখা বন্ধ করে দেন। কিন্তু তারপরও ড্রাইভের নাম 'এ' ও 'বি' ফ্লপির জন্যই সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে, যেন কখনো প্রয়োজন হলে সেগুলো ব্যবহার করা যায়।
শুরুর দিকে উইন্ডোজ এমন একচেটিয়া অপারেটিং সিস্টেম ছিল না। বরং উইন্ডোজের পরিবর্তে তখন অন্য একটি প্রোগ্রাম ছিল, যা ডিওএস-এ চলতো। হার্ডড্রাইভ যখন আদর্শ হয়ে উঠতে শুরু করে, তখন উইন্ডোজ তার ইনস্টলেশন ড্রাইভের জন্য 'সি' লেবেল ব্যবহার শুরু করে।
আধুনিক কম্পিউটারগুলো এখন আর ফ্লপিডিস্ক ব্যবহার করে না। কিন্তু এখনো এই নিয়মটি অনুসরণ করা হয়। হার্ডড্রাইভে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই প্রধান ইনস্টলেশন ড্রাইভ হিসেবে লেবেল 'সি' বরাদ্দ করে দেওয়া হয়। এর পিছনের প্রধান আরেকটি কারণ হলো, বেশিরভাগ সফটওয়্যার কোড করার সময় প্রাথমিক ওএস ড্রাইভ হিসেবে 'সি' ড্রাইভকে নির্বাচন করা হয়। তাই উইন্ডোজে এই ড্রাইভের নাম পরিবর্তন করলে, আপনার কম্পিউটারের প্রোগ্রামগুলো ঠিকমতো না-ও চলতে পারে।